ব্রেকিং:
‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’ পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত বিকেল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙার আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন দেশের দায়িত্ব নিলেন সেনাপ্রধান জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ কুমিল্লায় কেউ মারা যায় নি, গুলিবিদ্ধ ৮ জন আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের দুই পাশে আ.লীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান দেবিদ্বারে স্বজনদের আহাজারি থামছে না ‘গুলিতে মাথার মগজ উড়ে যায় শোক মিছিল স্থগিত করলো আওয়ামী লীগ মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও
  • শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আ’লীগে ইউসুফ-জাহাঙ্গীরের লড়াই, বিএনপিতে হতাশা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০১৮  

কুমিল্লা, ০৬ নভেম্বর- একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে মুরাদনগর উপজেলার ২টি থানা ও ২২টি ইউনিয়ন নিয়ে কুমিল্লা-৩ আসনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা।

বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এলাকায় নানা কৌশলে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সমর্থকগোষ্ঠী সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও। বর্তমান এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী।

ব্যাপক উন্নয়ন কাজ, সাংগঠনিক তৎপরতা ও প্রচারে তিনি এগিয়ে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য তিনি এরই মধ্যে কেন্দ্র কমিটিসহ পাড়া-মহল্লায় উপকমিটি গঠনের কাজ শেষ করেছেন। তাকে নিয়ে একাট্টা দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী-সমর্থক।

দলের অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী জাহাঙ্গীর আলম সরকারও মাঠে প্রচার চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের এ দুই নেতার মাঝে চলছে মনোনয়ন লড়াই। আর প্রার্থী নিয়ে বিএনপিতে রয়েছে হতাশা।

আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের নাম শোনা গেলেও মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় তিনি ৮ বছর ধরে বিদেশে। তবে বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সভাপতি কাজী আমীর খসরু ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়া জাতীয় পার্টির আক্তার হোসেন এবারও মহাজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশী।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ১৯৯১ সালে এমপি নির্বাচিত হয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় মুরাদনগরে তিনি ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছেন।

১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়ে কায়কোবাদ আওয়ামী লীগের ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনকে হারিয়ে এমপি হন। ২০০৮ সালে নৌকার জোয়ারের সময়ও প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৬ ভোট পেয়ে কায়কোবাদ বিজয়ী হন।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার পেয়েছিলেন ১ লাখ ১০ হাজার ভোট।

সবশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে এমপি হন এবং পরে তিনি আওয়ামী লীগে ফিরেন।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, ইউসুফ আবদুল্লাহ জয়লাভ করেই বিএনপি ভোটব্যাংক খ্যাত এলাকার দিকে নজর দেন। নানা উপায়ে তিনি ওইসব এলাকায় নিজের অবস্থান মজবুত করেন। তিনি ঢাকায় বসবাস করলেও সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন এলাকায় অবস্থান করেন এবং প্রতিটি পাড়া-মহল্লা তিনি চষে বেড়ান।

উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম জানান, ইউসুফ আবদুল্লাহ সব এলাকায় বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ সবক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এমপি হওয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিত সাধারণ ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, মনোনয়ন দৌড়ে ইউসুফ আবদুল্লাহ এগিয়ে। মনোনয়ন পেলে তার বিজয় নিশ্চিত।

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জেলা পরিষদ সদস্য খাইরুল আলম সাধন বলেন, ইউসুফ আবদুল্লাহ ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। নির্বাচনকেন্দ্রিক কমিটি গঠনও করে ফেলেছেন তিনি।

কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার এবারও মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছন। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ছাড়াও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তার অনুসারীরা বলছেন, আগামী নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত। কথা হয় জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ২৭ বছর ধরে আমি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আছি। আমার হাত ধরে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন শক্তিশালী হয়েছে। বিগত সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের জয়ে আমার ব্যাপক অবদান রয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল আমার কাজের মূল্যায়ন করবে। দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

এছাড়া এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত প্রয়াত সাবেক এমপি ডা. ওয়ালী আহাম্মেদের ছেলে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ম. রুহুল আমীন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ কাইয়ুম খসরু।

এদিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার ঘটনায় ৮ বছরেরও বেশি সময় বিএনপির সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জাল হোসাইন কায়কোবাদ বিদেশে অবস্থান করছেন। শিগগিরই দেশে এসে নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন- এমন ঘোষণা দিয়ে তার কর্মী-সমর্থকরা ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন।

কায়কোবাদ আগামী নির্বাচনে অংশ নিলে মাঠের মেরুকরণ বদলে যেতে পারে বলে অভিমত এলাকাবাসীর। তবে নেতাকর্মীরা আগামী মাসে গ্রেনেড হামলা-মামলার রায়ের দিকেই তাকিয়ে আছেন। সূত্র জানায়, গ্রেনেড হামলার রায়ের ওপরই নির্ভর করছে তার নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি।

এদিকে কায়কোবাদের দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সভাপতি কাজী আমীর খসরু এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্লিন ইমেজের এ নেতার মুরাদনগরে রয়েছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা। তিনি দলের একটি অংশকে নিয়ে নানা কৌশলে মাঠে প্রচার চালাচ্ছেন।

আগামী নির্বাচনে তিনিই দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে দাবি তার অনুসারীদের। এ বিষয়ে কাজী আমীর খসরু বলেন, দলের দুঃসময়ে এলাকায় অবস্থান করে দলের হাল ধরেছি। দলকে সংগঠিত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সিনিয়র নেতাদের নির্দেশনায় এলাকায় দলীয় কর্মসূচি পালনসহ গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, আগামী নির্বাচনে দল আমার কাজের মূল্যায়ন করবে।

এদিকে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে এ আসনে প্রার্থী করতে চাইছেন। তারা নিয়মিত ঢাকায় দৌড়ঝাঁপ করে তাকে মুরাদনগর থেকে নির্বাচন করার জন্য এবং এ আসনে দলের হাল ধরার জন্য অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। তিনি ঢাকার পল্লবী আসনে বিএনপির সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন।

দল যদি তাকে মুরাদনগর থেকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আসনটি পুনরুদ্ধার সম্ভব বলে অভিমত তার অনুসারীদের। এছাড়া বিএনপির প্রার্থী তালিকায় কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক শিল্পবিষয়ক সম্পাদক গোলাম কিবরীয়া এবং ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য একরামুল হক বিপ্লবের নামও রয়েছে।

এ দুই নেতাও দলের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ২১ আগস্টের মামলার আসামি কায়কোবাদের রায়ে কী হয়, তার ওপর নির্ভর করছে এ আসনে ব্যারিস্টার রফিকের নির্বাচন করা না করার বিষয়টি।

এছাড়া গত নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির আক্তার হোসেন এবারও মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি নিয়মিত এলাকায় এসে নানা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন।

আক্তার হোসেন বলেন, আগামী নির্বাচনে মহাজোট থেকে আমি মনোনয়ন পেতে সব চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আশা করি, এবারও মহাজোটের মনোনয়ন আমিই পাব