ব্রেকিং:
‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’ পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত বিকেল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙার আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন দেশের দায়িত্ব নিলেন সেনাপ্রধান জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ কুমিল্লায় কেউ মারা যায় নি, গুলিবিদ্ধ ৮ জন আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের দুই পাশে আ.লীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান দেবিদ্বারে স্বজনদের আহাজারি থামছে না ‘গুলিতে মাথার মগজ উড়ে যায় শোক মিছিল স্থগিত করলো আওয়ামী লীগ মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও
  • বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ‘বাঘ’ বাংলাদেশ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৮  

দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে নতুন ‘বাঘ’ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সে পথেই হাঁটছে দেশটি। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে দেশটির উন্নয়ন ও অর্জন দেখে এমন সম্ভাবনার কথাই বলেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উচ্চ-পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।

‘ইউরোপিয়ান ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিটি’র সাবেক সভাপতি ফ্রান্সের হেনরি ম্যালোসের নেতৃত্বে গত ৫ নভেম্বর ঢাকা সফরে আসে প্রতিনিধি দলটি। এসময় বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র একটি দেশ থেকে অতি স্বল্প সময়ে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দেশে (গত বছর দেশটির গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৯ শতাংশ) রূপান্তর করতে পারায় আওয়ামী লীগ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন ম্যালোস।

 

1.দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ‘বাঘ’  বাংলাদেশ

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এটি আমার প্রথম সফর। আমি বলতে পারি বাংলাদেশের সার্বিক গতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেখে আমি বিস্মিত।

তিনদিনের ওই সফরে প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দুই সদস্যও ছিলেন। তারা হলেন, পোল্যান্ডের রিসযার্ড যারনেকি ও ফ্রান্সের ক্রিস্টেল লেচেভেলিয়ার। অন্য সদস্যরা হলেন- পোল্যান্ডের এমপি মিসেস আগনেস্কা সিগাস, নিকোলাস বে’এর বিশেষ উপদেষ্টা গুইলাউমে প্রাডৌরা, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের রাজনৈতিক দল ‘ইএনএল’র চেয়ারম্যান এবং ইউরোপিয়ান ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিটির সদস্য এমএস মোদি শর্মা।

সফরের প্রথম দিন প্রতিনিধি দলটিকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে ১৬ কোটি লোকের আহারের ব্যবস্থা করতে হয়। আমাদের সরকারের লক্ষ্য দেশের মানুষের উন্নত জীবন নিশ্চিত করা, যেখানে তারা শান্তি ও সম্প্রীতিতে বসবাস করতে পারে।

 

2.দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ‘বাঘ’  বাংলাদেশ

বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে, নারীর ক্ষমতায়ন, শ্রম অধিকার, সন্ত্রাস দমন, প্রতিবন্ধী ও অটিজমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য উদ্যোগ গ্রহণসহ সন্ত্রাস ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ব্যাপক প্রশংসা করেন তারা।

পরে প্রতিনিধি দলটি মন্ত্রী, উচ্চ পর্যাযের কর্মকর্তা ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এসময় মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় দৃষ্টিভঙ্গি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ এবং অংশীদার দেশগুলোর বহুমাত্রিক সহযোগিতার পাশাপাশি মাদরাসা ও পারিবারের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশ নেয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

 

3.দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ‘বাঘ’  বাংলাদেশ

বাংলাদেশ সরকারের নেয়া ‘আপনার শিশুকে জানুন’ কর্মসূচির ভূয়সী প্রসংশা করেন ই্ইউ প্রতিনিধিরা। এই কর্মসূচিতে সন্তানদের উপর মৌলবাদী মতাদর্শের সম্ভাব্য প্রভাবের প্রতি সংবেদনশীল ও সচেতন হতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কর্মসূচিটি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সাহায্য করেছে বলে উল্লেখ করেন তারা।

২০১৬ সালে ‘হলি আর্টিজান’ হামলার পর থেকে দেশে বড় কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা না ঘটায় প্রতিনিধি দলটি দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেন। এছাড়া, পূর্ববর্তী বিএনপি ও জামায়াত সরকারের শাসনামলে হওয়া ব্যাপক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে দেশকে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে নেয়া ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করায় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশংসা করেন তারা।

 

4.দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ‘বাঘ’  বাংলাদেশ

সফরের পরবর্তী দুই দিন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দল, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, আইনজীবী দল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইইউ প্রতিনিধি দলটি।

এসময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা। প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের ধর্ম নিরপেক্ষতার প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকে গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্যরা বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার এই নীতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণয়ন করেছিলেন।

 

5.দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ‘বাঘ’  বাংলাদেশ

পরে প্রতিনিধি দলটি জাতির জনক শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এসময়, প্রতিনিধিদলের মতামত প্রকাশ করে ম্যালোস স্মৃতিস্তম্ভের সুবর্ণ বইয়ে লেখেন, ‘এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য জাতির পিতার গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জন্য তার জ্ঞানী দৃষ্টিভঙ্গি জনগণকে সমৃদ্ধ করেছে।

রিসযার্ড যারনেকি তার বাংলাদেশ সফরকে ‘শিক্ষামূলক’ বলে অভিহিত করে বলেন, বাংলাদেশ খুবই সম্ভাবনাময় একটি দেশ। আগামী সংসদ নির্বাচনের পরেও দেশটি তার উন্নয়নের ধারা বজায় রাখবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শ অনুসরণ নিশ্চিত করে গণতন্ত্র, সমৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

6.দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ‘বাঘ’  বাংলাদেশ

গড় আয় ও কর্ম পরিববেশের দ্রুত উন্নয়ন, সঠিক ধারায় চলতে থাকলে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম নেতৃস্থানীয় দেশ হয়ে উঠবে বলেও প্রত্যাশা করেন যারনেকি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ইউরোপজুড়ে কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে পরিচিত, তাদের এই কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ়তা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অতি দ্রুত আরো অধিক সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাবে।

এই সম্ভাবনা শুধু ঢাকায় বৈদেশিক বিনিয়োগের কারণে নয়, বরং কৃষক, জেলে, শ্রমিক, প্রকৌশলী ও উদ্যোক্তাদের অসাধারণ প্রতিভা ও কর্মকাণ্ডের কারণেও হবে বলে আশা প্রকাশ করেন যারনেকি।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী বস্ত্র, পোশাক এবং ওষুধ রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে নেতৃস্থানীয় একটি দেশ। গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, সহনশীলতা এবং প্রতিবেশীদের সহযোগিতা ও এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কারণে বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ‘বাঘ’ হিসেবে পরিচিত পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন যারনেকি।