শেখ হাসিনার নির্দেশে মাঠ ছাড়লেন ছানু-বাদশা

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে নির্বাচনী মাঠ ছাড়লেন শেরপুর-১ ও ২ আসনের দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী। তারা হচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু ও কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা।

জেলার অপর শেরপুর-৩ আসনটিতেও সর্বাধিক সংখ্যক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে থাকলেও তারা ক্রমেই নৌকার প্রশ্নে নমনীয় হয়ে আসছেন।

দলীয় সূত্রানুযায়ী, শেরপুর-১ আসনে ৪ বারের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিকের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন ছানুয়ার হোসেন ছানু। এ আসনে দলের ১৭ জন নেতা দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও মূল মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন আতিক ও ছানু।

কিন্তু গণভবনে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ মনোনয়ন বোর্ডের সাক্ষাৎকারে মনোনয়ন প্রশ্নে উপজেলা চেয়ারম্যানদের না নেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন ছানু ও তার অনুসারীরা। এরপর গত ২৭ নভেন্বর দুপুরে হুইপ আতিক দলীয় মনোনয়ন নিয়ে শেরপুরে প্রবেশের পরপরই ফুঁসে ওঠে ছানু সমর্থকরা। তারা এক হয়ে শহরের খাদ্যগুদাম মোড়ে আমরণ অনশন কর্মসূচী ঘোষণা করে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ ওই সড়ক অবরোধ করে রাখে।

এ সময় হুইপ আতিকের দলীয় মনোনয়ন বাতিল চেয়ে ছানু তার বক্তব্যে বলেন, শেরপুরের ৩ লাখ ৬০ হাজার ভোটার আতিকের মনোনয়ন মানেন না। তাই শেরপুরের ১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভার মানুষ অনশন শুরু করেছে। এ সময় তিনি হুইপ আতিককে দুর্নীতিবাজ ও নারী লোভী আখ্যা দিয়ে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ আসনে মনোনয়নের পরিবর্তন চান।

পরে এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে ছানু স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। এতে কেন্দ্রে ডাক পড়ে ছানুর। এরপরই ২৮ নভেম্বর বুধবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমানসহ তার বলয়ের নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক জরুরি সভা আহবান করে নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ছানুকে আশ্বস্ত করেছেন যে, দেশের কোথাও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তাই জাতীয় স্বার্থে নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। তবে ভবিষ্যতে তাকে দলীয়ভাবে মূল্যায়ন করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন তারা।

এদিকে শেরপুর-২ (নালিতাবাড়ী-নকলা) আসনে ৪ বারের এমপি, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বী কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশাও অবশেষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে বেগম মতিয়া চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয়ার পর থেকেই শোনা যাচ্ছিল বাদশা গত নির্বাচনের মতোই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। তবে তিনি মনোনয়ন ফরম জমা দেননি।

মঙ্গলবার নিজের বাসায় আয়োজিত দলীয় নেতা-কর্মী সমর্থকদের সভায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। ওইসময় তিনি নৌকার পক্ষেই লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমি ৩৫ বছরের রাজনীতিতে কোনো দিন অন্য দলে যোগদানের কথা স্বপ্নেও ভাবিনি। নির্বাচন করতে অন্য দলে যাব কেন। আমার নেত্রী শেখ হাসিনা ডেকে নিয়ে আমাকে যে নির্দেশনা দিয়েছেন আমি এর বাইরে যাব না।