ব্রেকিং:
‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’ পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত বিকেল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙার আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন দেশের দায়িত্ব নিলেন সেনাপ্রধান জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ কুমিল্লায় কেউ মারা যায় নি, গুলিবিদ্ধ ৮ জন আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের দুই পাশে আ.লীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান দেবিদ্বারে স্বজনদের আহাজারি থামছে না ‘গুলিতে মাথার মগজ উড়ে যায় শোক মিছিল স্থগিত করলো আওয়ামী লীগ মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও
  • শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৫ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আ’লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত: মহাজোটের শরিকরা পাচ্ছে ৬৫-৭০ আসন

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০১৮  

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আজ জানা যাবে কে কোন আসনে দলীয় টিকিট পাচ্ছেন।

 

দলীয় প্রার্থী ঘোষণার অপেক্ষায় থাকলেও আওয়ামী লীগের নির্বাচন সঙ্গী জোটের শরিক দলগুলোর আসন বণ্টন শতভাগ চূড়ান্ত হয়নি। শেষ মুহূর্তের দরকষাকষি চলছে।

 

মহাজোটের শরিকদের প্রার্থী আজ বা কালকের মধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে। মহাজোটে কে কোন আসনে লড়ছে সেটি জানা যাবে কাল বা পরশু। মহাজোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

 

দলীয় সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ ২৩০ থেকে ২৩৫ টি আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে রেখেছে। জোটের শরিকদের জন্য বরাদ্দ রেখেছে ৬৫টি আসন।৬৫ আসনে ছাড় দিয়েও শরিকদের না মানাতে পারলে আরও ৫টি আসন দেয়া হতে পারে।

 

এই ৬৫-৭০ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন পাচ্ছে জাতীয় পার্টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাবে ১৪ দলের শরিক দলগুলো। এরপর সর্বোচ্ট আসন পাচ্ছে যুক্তফ্রন্টের শরিক বিকল্পধারা।

 

এ বিষয়ে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, আমরা দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। এখন জোটের আসন বণ্টন নিয়ে কাজ চলছে। আমরা আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যে দল ও জোটের তালিকা আলাদাভাবে ঘোষণা করা হবে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের ভাবনা এখন মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি ও তাদের সন্তুষ্ট করা নিয়ে। ১৪ দলের বাইরে এবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সঙ্গী জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা ও নাজমুল হুদার তৃণমূল বিএনপি।

 

এ তিনটি দলের সঙ্গে রয়েছে পৃথক তিনটি জোট। জাতীয় পার্টির সঙ্গে রয়েছে প্রায় ৫৮টি রাজনৈতিক দল। আর নাজমুল হুদার সঙ্গে রয়েছে বিএনএ (বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট অ্যালায়েন্স) নামে ২০টির মতো দল।

 

সাবেক রাষ্ট্রপতি বি চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টে ১২টি দল রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি নিবন্ধিত। নিবন্ধিত দলগুলো হচ্ছে- বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।

 

এর বাইরেও জাকের পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট, সম্মিলিত ইসলামী জোট, ইসলামী ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সসহ আরও কয়েকটি দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করতে চাইছে।

 

সবমিলিয়ে আওয়ামী লীগের এবার নির্বাচনী সঙ্গী ৯০টিরও বেশী রাজনৈতিক দল। যদিও এসব দলের বেশীরভাগেরই নিবন্ধন নেই। তারা আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করতে চাইছে।

 

তাদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড, ফরাস উদ্দিন, জনপ্রিয় অভিনেত্রী শমী কায়সার এবং পুলিশের সাবেক একজন আইজি।

 

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, নির্বাচনী সঙ্গী অনেক দল হলেও তারা সবাই আসন পাবে না। আওয়ামী লীগ উইনেবল ক্যান্ডিডেটকে মনোনয়ন দেবে।সে যে দলেরই হোক না কেন।এমনকি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না হলেও সমস্যা নেই।

 

এ বিবেচনায় জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফিকে মনোনয়ন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। একজন সাবেক আইজিপিকেও মনোনয়ন দেয়ার কথা ভাবছে দলটি ‘উইনেবল ক্যান্ডিডেট’ বিবেচনায়।

 

মহাজোটের শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে শনিবার দিনভর শরিকদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

 

মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদসহ শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন কাদের।

 

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব দলের নেতাদের কাছ থেকে প্রার্থী তালিকা নেয়া হয়। শরিকদের কাছ থেকে পাওয়া নামগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে রাতে গণভবনে দলের শীর্ষ নেতারা এই তালিকা নিয়ে বৈঠক করেন।

 

 

এখন আসন ভাগাভাগির বিষয়টি আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে আছে।রোববারের মধ্যে (আজ) সবকিছু চূড়ান্ত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

 

জাতীয় পার্টিকে কয়টি আসন দেওয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। অন্য শরিকদের কতটি আসন দেওয়া হবে- এর জবাবে কাদের বলেন, ৬৫-৭০টির বেশি আসন দেয়া হচ্ছে না।

 

গতকাল বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক হয়। সন্ধ্যার পর তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে গণভবনে সভা হয়। এসব মিটিংয়ে জোট নেতাদের আসনভিত্তিক চাহিদা, প্রার্থীর সক্ষমতাসহ অন্যান্য বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়।

 

নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের বিষয়ও উঠে আসে। জয় নিশ্চিত করতে পারবে এমন প্রার্থীর নাম দেয়ার কথা বলা হয়। দুপুর বারটার দিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আসেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।

 

তারা বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে দলটির তালিকা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়। একপর্যায়ে জাতীয় পার্টির বর্তমান আসনগুলো ছাড়া তাদের আরও কোন কোন আসন দেয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়।

 

তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা ও মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু, অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ, সুনীল শুভরায়, সোলায়মান আলম শেঠ। জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কাছে অন্তত ৭০টি আসন দাবি করে জাতীয় পার্র্টি।

 

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, আসনের দাবির চেয়ে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচন করবে এ বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

 

সূত্র জানায়, জোটের নতুন আসা যুক্তফ্রন্টকে ৪ থেকে ৫টি আসন দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ জন্য জোটের অন্য দলের ওপর কিছুটা চাপ পড়ছে।

 

এছাড়া যেসব নিবন্ধিত ইসলামী দল মহাজোটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাদের জন্য বেশ কয়েকটি আসন ছাড়তে হচ্ছে। সব মিলে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল তা শনিবার নিরসন গেছে। এদিন রাতে গণভবনে সবার চাহিদা ও যোগ্যতম প্রার্থী ধরে আসন বণ্টনের কাজ চূড়ান্ত করতে বসেছে আওয়ামী লীগ।

 

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান যুগান্তরকে বলেন, জোট শরিকদের সঙ্গে নির্বাচনী আসন নিয়েই সমঝোতা হবে। যেখানে যে দলের উইনেবল প্রার্থী থাকবে, তাকেই জোটের প্রার্থী করা হবে। তিনি বলেন, সবার সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে। সবার চাওয়া-পাওয়া শোনা হচ্ছে। আমরাও সবার সুবিধা ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্তের দিকেই যাচ্ছি।