ব্রেকিং:
‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’ পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত বিকেল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙার আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন দেশের দায়িত্ব নিলেন সেনাপ্রধান জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ কুমিল্লায় কেউ মারা যায় নি, গুলিবিদ্ধ ৮ জন আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের দুই পাশে আ.লীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান দেবিদ্বারে স্বজনদের আহাজারি থামছে না ‘গুলিতে মাথার মগজ উড়ে যায় শোক মিছিল স্থগিত করলো আওয়ামী লীগ মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও
  • শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৫ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

একটি মুরগির দাম প্রায় ২ কোটি টাকা!

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৮  

একটি মুরগি কিনতে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের খরচ করতে হচ্ছে প্রায় দেড় কোটি টাকা অর্থ্যাৎ ১ কোটি ৪৬ লাখ বলিভার (ভেনেজুয়েলার মূদ্রা)!বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য ১ কোটি ৮০ লাখ! রুটি কিনতে প্রয়োজন পড়ে ৪০ লাখ বলিভার।আর ব্যাগভর্তি বাজার করতে চান? তহলে গাড়ি ভর্তি টাকা নিয়ে যেতে হবে! ভেনেজুয়েলায় গত কয়েকমাস ধরে জিনিসপত্রের দাম প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিশেষ করে খাবার এবং ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। এর প্রধান কারণ দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা। আর তাই খাদ্যের অভাব ও সু-চিকিৎসার অভাবে দেশটির হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ইকুয়েডর, পেরু, চিলিসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন।

টিস্যুর বদলে টাকা!

ভেনেজুয়েলার কোনো রেস্টুরেন্ট খেতে গেলে আপনাদের টিস্যুর পরিবর্তে দেয়া হবে টাকা!অবাক হওয়ার কোনো কারণ নেই। ভেনেজুয়েলাতে বর্তমানে এক প্যাকেট টিস্যু কিনতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। তাই রেস্টুরেন্ট মালিকরা টিস্যুর বদলে টাকা দিচ্ছেন। অবাক হলেও সত্যি, ভেনেজুয়েলার প্রতিটি ডাস্টবিনেই এখন টাকা পাওয়া যাচ্ছে। টিস্যু হিসেবে ব্যবহারের পর ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে সেই টাকাকে।শুধু তাই নয়,টাকা দিয়ে বানানো হচ্ছে ব্যাগ, পুতুল থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের জিনিস-পত্র।

শোবিজ ইন্ডাস্ট্রিতে ধস

দেশ ছাড়ছে ভেনেজুয়েলার সুন্দরীরাও। এর প্রধান কারণ, অর্থনৈতিক মন্দা শুরুর পাশাপাশি সেখানকার শোবিজ ইন্ডাস্ট্রিও ধসে গেছে অনেকখানি। বাজারে কোনো নতুন পণ্য নেই, তাই পণ্যের বিজ্ঞাপন মডেলদের চাহিদাও নেই! সেখানে গান কিংবা সিনেমা নির্মাণ তো বহুদূর! আন্দ্রেয়া ডিয়াজ৷ ২৬ বছর বয়সী এই তরুণী ভেনেজুয়েলার একজন মডেল। ভেনেজুয়েলার শহর ভালেন্সিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বেড়ে ওঠা ওই শহরেই। তার স্বপ্ন ছিলো ভেনেজুয়েলার শোবিজ ইন্ডাস্ট্রিতে একটি স্থায়ী জায়গা করে নেয়া। কিন্তু স্বপ্ন বাস্তব হওয়ার পথেই নিঃশ্বেষ হয় দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে। তাই তিনি প্রথমে পানামা ও পরে মেক্সিকো হয়ে চিলিতে আসেন। এখন চিলিতে থাকছেন তিনি। ভেনেজুয়েলাতে যাওয়ার আর কোনো ইচ্ছে তার নেই। কারণ তিনি আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। আসন্ন ‘মিস ইউনিভার্স' প্রতিযোগিতায় চিলির প্রতিনিধিত্ব করবেন তিনি। সম্প্রতি ডয়েওেচ ভেলেতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আন্দ্রেয়া ডিয়াজ বলেন, আমার খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু কিছু করার নেই। যে দেশের মাটিতে প্রথম ব়্যাম্পে হাঁটতে শিখেছি সেই ভেনেজুয়েলায় মডেলের চাহিদা কমছে দিন দিন। আমার চলে আসার পেছনে অন্য কোন কারন নেই৷

আন্দ্রেয়া ডিয়াজের হাজারো তরুণী দেশ ছাড়ছেন। কিন্তু একসময় সুন্দরী নারীদের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো এই ভেনেজুয়েলা! নব্বইয়ের দশক থেকে দেশটিতে সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতার বাড়তে থাকে৷ বিশেষ করে ‘মিস ভেনেজুয়েলা' প্রতিযোগীতায় নারীদের এতোটাই আগ্রহ ছিলো যে, বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করতে চার মাস সময় লাগতো৷ সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ‘মিস ইউনিভার্স', ‘মিস ওয়ার্ল্ড' বা ‘মিস আর্থ'-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভেনেজুয়েলার সুন্দরীদের উপস্থিতি ছিলো দেখার মতো এবং প্রসংশনীয়। সেই নির্ভরতার জায়গা থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে এখানে তরুণীরা আসতো র‌্যাম্পে হাঁটা এবং গ্রুমিং-এর কাজ সেরে নিতে। ফলাফল স্বরুপ, এই প্রতিযোগিতার মঞ্চ থেকে উঠে আসেন অসংখ্য মডেল, অভিনেত্রী, টেলিভিশন সঞ্চালিকা থেকে মেয়র বা রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীও৷

কোথায় যাচ্ছেন সুন্দরী নারীরা?

একদিকে আয় কমেছে, অন্যদিকে একবেলা খাবার খেতে কোটি টাকা লাগে-এমন অবস্থাতে দেশে কে-ই-বা বসবাস করতে চাইবে!সে কারণেই মূলত সুন্দরীরা ভেনেজুয়েলা ছাড়ছেন!তাদের প্রধান গন্তব্য মেক্সিকো।সেখানে সুন্দরীদের খুব ভালো মূল্যায়ন করা হয়।বিশেষ করে ভেনেজুয়েলার নারীদের।এরপর তাদের আস্থার জায়গা কোলোম্বিয়া বা পর্তুগাল৷বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে, জীবিকার খোঁজে এই নারীরা পাড়ি দিয়েছেন তুরস্ক বা ভারতের মতো দূরের দেশগুলোতেও৷নিজ দেশ ছেড়ে তারা বেশ ভালো অবস্থান তৈরি করতেও সক্ষম হচ্ছেন।প্রমাণস্বরুপ বলা যায়,‘মিস ওয়ার্ল্ড' প্রতিযোগিতায় পর্তুগালের হয়ে মঞ্চে নামবেন এক ভেনেজুয়েলান নারী৷এই প্রবণতার চিত্র আগেও ‘মিস আর্থ' প্রতিযোগিতায় দেখা গেছে যখন পেরু ও স্পেন,দুই দেশেরই প্রতিনিধিত্ব করেন দুই ভেনেজুয়েলান নারী৷

 

2.একটি মুরগির দাম প্রায় ২ কোটি টাকা!

আরো একটি কারণ রয়েছে

শুধু অর্থনৈতিক নয় সুন্দরী নারীদের দেশত্যাগের পেছনে রয়েছে আরো একটি কারণ৷ভেনেজুয়েলায় থাকাকালীন আন্দ্রেয়া একটি ত্বক পরিচর্যা কেন্দ্রে যান৷পরে দেখা যায়,পরিচর্যার বদলে তার মুখে দেখা দিয়েছে ফুসকুড়ি৷ফলে কমতে থাকে মডেল হিসাবে ভেনেজুয়েলায় তার কাজের সুযোগ৷নারীর সৌন্দর্য্যের মান কেমন হবে, সে বিষয়ে ভেনেজুয়েলার সৌন্দর্য্য শিল্পের অন্দরমহলে বাস করে কিছু বাঁধাধরা চিন্তা বা স্টিরিওটাইপ,যা ভাঙতে অক্ষম হলে নারীরা অন্য দেশে আশ্রয় নেন৷ অবশ্য চিলিতে আসার পর আন্দ্রেয়ার এই সমস্যা সমাধান হয়েছে৷ এখানে উন্নত মেকাপের ফলে সহজেই ঢেকে নিতে পারেন তিনি ত্বকের সব খুঁত৷

প্রতিবেশি দেশগুলো ক্ষেপেছে!

২০১৪ সাল থেকে সাধারণ মানুষরা ভেনেজুয়েলা থেকে মানব-স্রোতের মতো ডুকছে ব্রাজিলে। তাই সম্প্রতি এই পরিস্থিতি সামলাতে সীমান্তে সৈন্য মোতায়েনের আদেশ জারি করেছেন ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট। আদেশে বলা হয়েছে - সীমান্তে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে সৈন্য পাঠানো হচ্ছে। জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ভেনেজুয়েলার ট্রাজিক পরিস্থিতি পুরো দক্ষিণ আমেরিকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা হুমকিতে ফেলেছে।কিন্তু সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করায় খোলা আকাশের নিচে রাত পার করছে সেসব পরিবার। জাতিসংঘের বিবৃতিতে জানানো হয়, ভেনেজুয়েলার উদ্বাস্তু পরিস্থিতি ক্রমেই সংকটজনক হয়ে উঠছে। গত তিন বছরে ১৬ লাখেরও বেশি ভেনেজুয়েলার নাগরিক দেশ ছেড়েছে। বর্তমানে আটকে পড়া ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের আশ্রয় দিতে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।কলম্বিয়াতে এখন ভেনেজুয়েলানের সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি।একুয়েডরে ৫ লাখের বেশি, পেরুতে কমপক্ষে ৪ লাখ, ব্রাজিলে ৬০ হাজার।কয়েকটি সীমান্ত শহরে ভেনেজুয়েলানদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ব্রাজিলের সরকার।তারই পরিপ্রেক্ষিতে সৈন্য মোতায়েনের বিরল সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।এ মাস থেকে সীমান্তে কড়াকড়ি শুরু করেছে পেরু।জাতীয় পরিচয়পত্রের বদলে এখন থেকে পাসপোর্ট চাওয়া হচ্ছে।তবে হাজার হাজার মানুষ পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধভাবে ঢুকছে।

যা বলছেন ভেনেজুয়েলা সরকার

বিরোধী পক্ষ ও মার্কিন প্রশাসন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে দায়ী করা হয়েছে এমন পরিস্থিতির জন্য। তবে মাদুরোর আঙুল পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর। তিনি বলেছেন, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র- ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেছে, তার সরকারের বহু সদস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ভেনেজুয়েলার সংসদের স্পিকার বলেছেন, সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে ইচ্ছা করে বর্তমানের এই অভিবাসন সমস্যা সৃষ্টি করা হয়েছে।ওই দেশের মিড়িয়া বলছে, এটা পাতানো খেলা!