ব্রেকিং:
‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’ পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত বিকেল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙার আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন দেশের দায়িত্ব নিলেন সেনাপ্রধান জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ কুমিল্লায় কেউ মারা যায় নি, গুলিবিদ্ধ ৮ জন আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের দুই পাশে আ.লীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান দেবিদ্বারে স্বজনদের আহাজারি থামছে না ‘গুলিতে মাথার মগজ উড়ে যায় শোক মিছিল স্থগিত করলো আওয়ামী লীগ মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও
  • শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৫ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কোটি প্রবাসীর বোবা কান্না!

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০১৮  

বিদেশ মানেই সোনার হরিণ, এই কথাটি বেশ প্রচলিত বাংলাদেশে, কিন্তু এই সোনার হরিণের সন্ধানে কত জীবন হারিয়ে যাচ্ছে তা কি কেউ ভেবে দেখেছি? দেশের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ প্রবাসী, এই প্রবাসী শব্দটি কেমন যেন এক অসহায় নাম, একজন প্রবাসীর পরবাসে যাওয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুই ভোগান্তি, হতাশা ও অসহায়ত্বের শিকলে আবদ্ধ।

সরকারের উচিত প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ানো। সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করাও প্রয়োজন। বিদেশে যাওয়া বাবদ ব্যাংক লোন থেকে নানা সুযোগের কথা উল্লেখ থাকলেও সুদের টাকাই বড় আশ্রয়। সরকারিভাবে শ্রমিক নেয়ার কথা থাকলেও দালালই একমাত্র মাধ্যম। কিছু অসচ্ছল শ্রমিক সচ্ছলতার আশ্রয় পেতে ছুটে যায় প্রবাস নামক যন্ত্রণাময় জায়গায়। প্রবাসীদের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে দেখা হয় কিন্তু বিমানবন্দরে কোনো মূল্যায়ন করা হয় না।

এমতাবস্থায় প্রবাসীরা সরকারের কাছে বেশকিছু দাবি জানিয়েছে। দাবি-দাওয়া গুলো হলো- ১. প্রবাসী আয় করমুক্ত, ২. বিদেশ যেতে রয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অভিবাসন লোন, ৩. বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর পুনর্বাসন লোন, ৪. বিদেশ থেকে ফিরে কেউ কোনো ব্যবসায়িক প্রকল্প করতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন, ৫. বিদেশে কোনো প্রবাসী মারা গেলে লাশ দেশে আনার পর সরকার লাশ দাফনের জন্য ৩৫ হাজার অনুদান।

এ ছাড়া ৬. মৃত ব্যক্তির পরিবারকে এককালীন তিন লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান, যা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মাধ্যমে দেয়া হয়ে থাকে, ৭. বিদেশে কর্মরত থাকাকালে নিয়োগকর্তা কর্তৃক কোনো প্রতারণা বা বঞ্চনার শিকার হলে, বেতন আটকে দিলে তা ওই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের মাধ্যমে সব ধরনের আইনি সহায়তা প্রদান, ৮. বিদেশে কেউ মারা গেলে লাশ পাঠাতে সব আনুষ্ঠানিকতার ব্যাপারে সাহায্য,

৯. বাংলাদেশের সব ব্যাংকে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ সুবিধা ১০. ঢাকাসহ দেশের সব নামকরা অথবা যেকোনো স্কুল-কলেজ সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবাসীদের সন্তানদের ভর্তির জন্য বিশেষ কোটাসহ নানা সুবিধার কথা উল্লেখ থাকলেও কতোটুকু প্রবাসীরা পাচ্ছে তা সরকারের ভেবে দেখা উচিত। সুবিধাগুলো নিশ্চিত করতে সরকারের সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

বেসরকারি জরিপে প্রবাসীর সংখ্যা কোটিতে। তারাই এ বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়ে থাকে। রেমিট্যান্স অর্জন করে অনেক দেশই এখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের শীর্ষে। সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স অর্জন করে ভারতীয়রা। এ বছর মোট ছয় হাজার ৯০০ কোটি ডলার নিজ দেশে পাঠিয়েছেন। ক্রমান্বয়ে চীন, ফিলিপাইন, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, মিসর, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, (নবম স্থানে বাংলাদেশ) ইন্দোনেশিয়া।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রেমিট্যান্স আদান-প্রদানে বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি করিডরের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ ১৬তম অবস্থানে রয়েছে। এ করিডোর দিয়ে বছরে ৫৬০ কোটি ডলার আদান-প্রদান হয়। এ ছাড়া সৌদি আরব-বাংলাদেশ করিডোরটির অবস্থান বিশ্বে ২৩তম।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রবাসীরা ৫৬২.৬২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। এ ছাড়া ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ১০১০.৯৯ বিলিয়ন ডলার, ২০১৫-১৬ ১১৬৮.৫৭ বিলিয়ন, ২০১৪-১৫ ১১৮৯.৯৩ বিলিয়ন, ২০১৩-১৪ ১১০৫.৮৪ বিলিয়ন, ২০১২-১৩ ১১৫৬.৪৭ বিলিয়ন, ২০১১-১২ ১০১৮.৮২ বিলিয়ন, ২০১০-১১ ৮২৯.৯১ বিলিয়ন, ২০০৯-১০ ৭৬০.১১ বিলিয়ন।

এবং ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ৬৬৬.৭৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।এছাড়া ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৫৪২.৯৬ বিলিয়ন, ২০০৬-২০০৭ ৪১৩.০১ বিলিয়ন, ২০০৫-০৬ ৩২২.৭৬ বিলিয়ন, ২০০৪-০৫ ২৩৬.৪৮ বিলিয়ন, ২০০৩-০৪ ১৯৮.৭০ বিলিয়ন, ২০০২-০৩ ১৭৭.২৯ বিলিয়ন, ২০০১-০২ ১৪৩.৭৭ বিলিয়ন, ২০০০-০১ ১০১.৭০ বিলিয়ন, ১৯৯৯-২০০০ ৯৮.০৭ বিলিয়ন, ১৯৯৮-৯৯ ৮১.৯৮ বিলিয়ন এবং ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ৬৯.৩৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা।

এর আগে এই যোদ্ধাদেরকে কামলা বলতে শুনেছি। কেন? ওদের রেমিটেন্স আমাদের উন্নয়নের অংশীদার নয়। তাহলে ওদের অবমাননা কেন? ওরা যদি কামলা হয় ওদেরকে একটি আলাদা বিমানবন্দর করে দেয়া যেতে পারে। যেখানে শুধু কামলারাই আসা যাওয়া করবে। কারণ প্রতি বছর ৩৫ লাখ লোক বিদেশে যাতায়াত করে।

এর মধ্যে ৬০ শতাংশই প্রবাসী। তাহলে ওদের আলাদা এয়ারপোর্ট ক্ষতি কী? ওদের বিদেশে পাঠানোর পর অনেক শ্রমিকদের মালিক এয়ারপোর্টে নিতে আসে না। কাজ পায় না। ওখানকার অ্যাম্বাসিতেও প্রবাসীরা মূল্যায়ন পায় না। কাজ না পেয়ে ঋণের চিন্তায় অনেক টেনশন করতে করতে মারা যায়। লাশটা দেশে পাঠানোর কোনো উদ্যোগ নেয় না দূতাবাস। ওদেশের সরকার ইচ্ছে মতো সময়ে লাশ দেশে পাঠায়। রেমিট্যান্স দেশের অর্থনৈতিক শক্তি। এটা নির্জীব হলে পুরো শক্তিটাই নির্জীব হয়ে যাবে।

দেশে উন্নয়নের এই মহাশক্তি রেমিট্যান্স যেমন দেশের জন্য প্রয়োজন ঠিক তেমনি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বাঁচানোও আমাদের সবার দায়িত্ব। ওদের অবমূল্যায়ন করার কোনো সুযোগ নেই। সরকারের প্রয়োজন যৌথভাবে প্রবাসীদের সমস্যা সমাধান করে এই যোদ্ধাদের আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। তবেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ইস্পাতের মতো শক্তিশালী হবে।

হায়রে স্বপ্ন...তুমি আমাকে করেছ টাকা অর্জনের মেশিন যার হৃদয়ে অবিরাম কষ্টের সীমাহীন বোবা কান্না বহমান, চলছে অবিরত...।