ব্রেকিং:
‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’ পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত বিকেল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙার আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন দেশের দায়িত্ব নিলেন সেনাপ্রধান জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ কুমিল্লায় কেউ মারা যায় নি, গুলিবিদ্ধ ৮ জন আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের দুই পাশে আ.লীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান দেবিদ্বারে স্বজনদের আহাজারি থামছে না ‘গুলিতে মাথার মগজ উড়ে যায় শোক মিছিল স্থগিত করলো আওয়ামী লীগ মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও
  • শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৫ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জোটের প্রার্থী নয় ভোটে গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮  

প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচনে ঝুঁকি নেবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মহাজোটের শরিকদের হাজারও চাপে এখন পর্যন্ত বিন্দুমাত্র সরেনি টানা দু’বার ক্ষমতায় থাকা দলটি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের মতে, জোট শরিকরা সবাই প্রার্থী দিতে চান। সবাই নিজেকে যোগ্য মনে করছেন। তাদের সক্ষমতা যাচাইয়ের কাজটি আওয়ামী লীগকেই করতে হচ্ছে।

অনেকের এলাকায় হদিস নেই; অথচ মনোনয়ন নিয়ে জোর লবিং করছেন। তারা বলেন, চ্যালেঞ্জিং নির্বাচনে আবেগ থাকতে নেই। তাই আমরা অধিকাংশ আসনে প্রার্থী দিয়েছি। মহাজোটের শরিকদেরও বলেছি নিজেদের মতো করে প্রার্থী দিতে। মাঠের ও ভোটের পরিস্থিতি বুঝে জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, আমরা অনেক আসনেই মহাজোটের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছি। আবার অনেক আসনে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। তবে আমরা জোটের প্রার্থী দেখে না, এলাকায় ভোট ও জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে মনোনয়ন চূড়ান্ত করব। আশা করি আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মহাজোটের আসন বণ্টনের কাজ শেষ হবে। এরপর ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মহাজোটের প্রার্থী বাদে জোট শরিকরা তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবে।

একই কথা বলেছেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। শুক্রবার যুগান্তরকে তিনি বলেন, দল কিংবা জোটে দেখে নয়, আমরা প্রার্থী দিচ্ছি যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা দেখে। যে দলে এমন প্রার্থী আছে সে দল থেকেই মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। জয় নিশ্চিতে এর বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।

এদিকে মহাজোটের আসন বণ্টনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ বলে আসছিল- এবারের নির্বাচনে মহাজোটের শরিকদের ৬৫ থেকে ৭০টি আসন দেয়া হবে। সে হিসেবে ২৫ নভেম্বর ২৩০টি আসনে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের নৌকার চিঠি দেয় আওয়ামী লীগ। এতে মহাজোটের শরিকদের মধ্যে একটি প্রশান্তির ছায়া নেমে আসে। শুরু হয় নতুন উদ্যমে আসন ভাগাভাগি প্রক্রিয়া।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ধানমণ্ডির নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয় এবং গণভবন পর্যন্ত চলতে থাকে এই আলোচনা। অল্প সময়ের মধ্যে মহাজোটের সবক’টি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বি. চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের হাসানুল হক ইনু, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীসহ মহাজোটের অন্য নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আসন বণ্টনের কথা জানিয়ে দেন।

কিন্তু আসন নিয়ে চূড়ান্ত সুরাহা হওয়ার আগেই অর্থাৎ ২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষদিন পর্যন্ত ২৬৪টি আসনে ২৮১ জন দলীয় প্রার্থী দেয় আওয়ামী লীগ। আর এতেই নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হয় মহাজোটের শরিকদের মধ্যে। অবশ্য জোটের আসন বণ্টন চূড়ান্ত না হওয়ায় শরিকরাও নিজেদের মতো করে বিভিন্ন আসনে প্রার্থী দেয়।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের একটি সূত্র যুগান্তরকে জানায়, ভোটের মাঠের অধিকাংশ জোটের প্রার্থী ভোটে জেতার মতো নয়। জোট শরিকদের অনেকেই এবারের নির্বাচনকে দশম সংসদ নির্বাচনের মতো ভাবছে। যেনতেন একজন প্রার্থী এনে জোটের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টাও করেছেন কেউ কেউ। কিন্তু এবারের নির্বাচনে প্রতিপক্ষ খুবই শক্তিশালী। তাদের মোকাবেলায় দরকার শক্তিশালী প্রার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য যুগান্তরকে বলেন, আমরা আপাতত অধিকাংশ আসনে (২৬৪) প্রার্থী দিয়েছি। জোট শরিকদেরও বলেছি, তাদের মতো করে প্রার্থী দিতে। সবাই নিজেদের সামর্থ্য মতো দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। এখন আমরা মাঠের হিসাব কষছি। সব দলের প্রার্থীই ভোটের মাঠে। বিশ্লেষণও সহজ হবে। মহাজোটের প্রার্থী যেখানে এগিয়ে থাকবেন সেখান থেকে দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করা হবে। না হলে একচুলও ছাড় দেয়া হবে না। জয় নিশ্চিত হবে এমন জনপ্রিয় প্রার্থীই ভোটের মাঠে থাকবে।

এদিকে মহাজোটের একাধিক শরিক দলের নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আসন বণ্টন নিয়ে তারা ধোঁয়াশার মধ্যে আছেন। অধিকাংশ আসনে আওয়ামী লীগ তাদের নিজস্ব প্রার্থী দেয়ায় এই হতাশা আরও বেড়েছে।

জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, জিতে আসতে পারবে এমন দেখেই আমরা ৭টি আসন মহাজোটের কাছে প্রত্যাশা করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সব আসনে নিশ্চয়তা দেয়নি আওয়ামী লীগ। তবে প্রার্থী প্রত্যাহারের আগেই এসব চূড়ান্ত হবে বলে প্রত্যাশা করছি।

তিনি বলেন, আমরা চাই জনপ্রিয় ও ভোটে এগিয়ে আছে এমন প্রার্থীই জোটের মনোনয়ন পাক। তবে সেটা যত দ্রুত হবে ততই ভালো।

জাতীয় সমাজতান্তিক দল-জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার যুগান্তরকে বলেন, আমরা আশা করছি আমাদের কাক্সিক্ষত আসনগুলো মহাজোটের কাছ থেকে পাব। দেখি কবে নাগাদ সেটি চূড়ান্ত হয়।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি ২১০টি আসনে ২৩৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। আসন সমঝোতা হলে তাদের প্রার্থী দেয়ার কথা ছিল ৪৫ থেকে ৫০টি। এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির অনেক আসনে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে।

এছাড়া জোটের শরিক জেপি ১৭, সাম্যবাদী দল ৩, গণতন্ত্রী পার্টি ৮, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩৩, বিকল্পধারা ৩৭, জাসদ ৫৩, জাকের পার্টি ১০৮, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল ৪৯, তরিকত ফেডারেশন ২০, বিএনএফ ৭১টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। জোটের নিবন্ধিত অন্যান্য দলও তাদের সুবিধামতো প্রার্থী দিয়েছে। তবে মহাজোটের এসব শরিক এখন আসন সমঝোতার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আসে।

মহাজোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে ক্ষোভ আছে কিনা- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এতবড় মহাজোট। এখানে তো ক্ষোভ-বিক্ষোভ কিছু হবেই। সেই ক্ষোভ আমরা প্রশমিতও করব। কিন্তু প্রত্যাহার পর্যন্ত বা তারপর যাদের ধৈর্য থাকবে না তাদের জন্য ব্যবস্থা আছে।