ব্রেকিং:
‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’ পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত বিকেল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙার আল্টিমেটাম, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন দেশের দায়িত্ব নিলেন সেনাপ্রধান জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ কুমিল্লায় কেউ মারা যায় নি, গুলিবিদ্ধ ৮ জন আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের দুই পাশে আ.লীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান দেবিদ্বারে স্বজনদের আহাজারি থামছে না ‘গুলিতে মাথার মগজ উড়ে যায় শোক মিছিল স্থগিত করলো আওয়ামী লীগ মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও
  • রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৬ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাঠ্য বইয়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ১০০ নম্বর রাখার দাবি

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮  

জহির রায়হান, মুনীর চৌধুরী, মুহম্মদ মুর্তজা, নিজামুদ্দীন আহমদ, আবুল কালাম আজাদ, সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্যসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো চত্বর। জাতির এই সূর্যসন্তানদের ছবিজুড়ে শোভা পাচ্ছে শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলের মালা। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে সজ্জিত চত্বরটি। যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসটি পালন করতে বধ্যভূমিতে ব্যস্ত সময় পার করছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীরা। বাঙালি জাতির অস্তিত্ব অস্বীকারকারী, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের সঙ্গে শিশু-কিশোরদের পরিচয় করিয়ে দিতে কুৎসিত চেহারার হত্যাকারীদের ছবিও টাঙানো হয়েছে বধ্যভূমিজুড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে গিয়ে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। আজ শুক্রবার জাতির সূর্যসন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের তরুণরা নিয়েছে এসব কর্মসূচি।

নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করা। বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে সাময়িক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারলেও পারেনি বাঙালিকে দমিয়ে রাখতে। বিজয়ের ৪৭ বছরের মধ্যে একাধিক সূচকে এরই মধ্যে পাকিস্তানকে ডিঙিয়ে নিজেদের মেধা ও সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে বাঙালি জাতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে বাংলাদেশের তরুণরা সামনে এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে। বিজয়ের ৪৭ বছর পরও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করছে সবাই।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করতে রাজধানীর রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আলোচনাসভা, মোমবাতি প্রজ্বালন, মৌন মিছিল, পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন।

তরুণরা জানায়, বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারী এবং হত্যাযজ্ঞের মদদদাতাদের সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের জানাতে রাখা হয়েছে দোসরদের ছবি। তারা মনে করে, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করতে এই একটিমাত্র দিবস পর্যাপ্ত নয়। এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মরণে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরো কর্মসূচি হাতে নেওয়া উচিত। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান নিয়ে আরো চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রয়োজন।

কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের কর্মী সায়মা খন্দকার বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের অবগত করতে আমরা শহীদদের ছবি সাজিয়েছি এই চত্বরে। একই সঙ্গে ১৯৭১ সালের এই দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে শিশুদের জানাতে প্রতীকী রক্তাক্ত লাশ স্তূপাকারে রাখা হবে চত্বরে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই একটিমাত্র দিনে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করি। পুরো বছর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং বধ্যভূমি অযত্নে পড়ে থাকে। তাই ঐতিহাসিক এসব স্থান আরো সুরক্ষিত রাখা উচিত।’

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং দেশের জন্মলগ্নে তাঁদের ত্যাগ ও অবদান সম্পর্কে জানাতে শিশুদের সঙ্গে নিয়ে গতকাল বিকেল থেকেই বধ্যভূমি চত্বরে ভিড় করছেন অভিভাবকরা। বধ্যভূমি চত্বরে গতকাল প্রবেশ করতে না পারলেও বাইরে থেকে শিশুদের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের ইতিহাস বর্ণনা করেছেন অনেক অভিভাবক।

আব্দুল হাকিম নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘এ দেশে সরকার পরিবর্তন হলে ইতিহাস বদলে যায়। স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয় সময়ভেদে। আমি আমার সন্তানকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কবর দেখাতে নিয়ে এসেছি।’

শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তানরা মনে করেন, ১৪ ডিসেম্বর এলেই সব গণমাধ্যম এবং রাষ্ট্র দিবসটি পালনে তৎপর হয়ে ওঠে। অথচ সারা বছর কোনো তথ্য প্রচার করা হয় না। উঠে আসে না শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগ ও জীবনচিত্র। একই সঙ্গে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে বুদ্ধিজীবী দিবস এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আরো বর্ণনা থাকা উচিত।

শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ বলেন, ‘গণমাধ্যম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তথ্য প্রচার না করলে তরুণরা কিভাবে জানবে প্রকৃত ইতিহাস? এই দিবস না এলে আমাদের তো তেমন কেউ ফোনও করে না। এ ছাড়া স্কুল-কলেজে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ১০০ নম্বরের আলাদা বিষয় থাকা উচিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘বধ্যভূমিতে আমি যাই। আমার বাবাকে ৩০ আগস্ট বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হানাদাররা। ফলে বাবার মৃত্যু দিবস হিসেবে আমরা ওই দিনটাকেই ধরি।’