৫টি গুলি করেছিলেন বিপ্লবী শৈলেশ রায় !!!
কুমিল্লার ধ্বনি
প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০১৮
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে কুমিল্লার পুলিশ সুপার এলিসনকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন যে বিপ্লবী, তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। সেই মহান বিপ্লবীর নাম শৈলেশ চন্দ্র রায়। তাঁর জন্ম কুমিল্লা শহরের ফয়জুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ভাড়া বাড়িতে। তিনি ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বরে ভোর বেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। বাবার নাম বৈকুন্ঠ নাথ রায়। শৈলেশ চন্দ্র রায়ের পারিবারিক ডাক নাম ‘ঋষিকেশ’। তাঁর দুই ভাই মধুসুদন রায় এবং যোগেশ চন্দ্র রায় দুজনেই অনুশীলন দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে কুমিল্লায় তখন অনুশীলন এবং যুগান্তর দুটি দলই প্রবলভাবে সক্রিয় ছিল। স্কুলে অধ্যায়নকালে শৈলেশ রায়ও অনুশীলন দলের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৩২সালের ২৯ জুলাই কুমিল্লা শহরের পার্ক রোডে প্রকাশ্য দিবালোকে এই তরুণ বিপ্লবী শৈলেশ রায় গুলি করে হত্যা করেন কুমিল্লার তৎকালীন ব্রিটিশ পুলিশ সুপার এলিসনকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় ৪ আগষ্ট তিনি মারা যান। এ ঘটনা স্বদেশী আন্দোলনে অভূতপূর্ব জোয়ার সৃষ্টি করেছিল। পুলিশ সুপার এলিসনকে হত্যার ঘটনা প্রায় বিস্মৃত হয়ে গেলেও কুমিল্লার মানুষের কাছে বেশি পরিচিত বিপ্লবী সুনীতি চৌধুরী ও শান্তি সেন। এলিসনকে হত্যার সাড়ের সাত মাস আগে এই দুইজন গুলি করে হত্যা করেন ডিস্ট্রিক ম্যাজিষ্ট্রেট সি বি জি স্টিভেন্সকে। সে ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল।
বিপ্লবী বীর শৈলেশ রায় সম্পর্কে আগেকার কোন গবেষক-ইতিহাসবিদ বিস্তারিত কোন তথ্য জানাতে পারেন নি। শুধু নাম জানাতে পারতেন। দীর্ঘ ৮৬ বছর পর সুদূর কানাডায় অবস্থানরত শৈলেশ রায়ের ছেলে ভানু রায়ের সন্ধান পান তরুণ গবেষক আহসানুল কবীর। তিনি শৈলেশ রায়ের ছেলের সাথে আলোচনা করে এবং শৈলেশ রায়ের নিজের লেখা ডায়েরি হাতে পেয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার এলিসনকে হত্যা ও হত্যারপূর্বপর সব কিছু জানতে পারেন। যা আজকের ‘দৈনিক কুমিল্লার কাগজ’এর ৬ এর পাতায় ছাপা হলো।
তরুণ গবেষক আহসানুল কবীর লিখেছেন- ধাপে ধাপে শৈলেশ রায় মাষ্টার দা সূর্যসেনের দৃষ্টিতে আসেন এবং তাঁর বিশ্বস্ত কর্মীতে পরিণত হন। ১৯৩০ সনে মাষ্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম দখলের পরিকল্পনায় অস্ত্রাগার লুন্ঠন সফল হলেও চট্টগ্রাম দখলের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে বিপ্লবীদের উপর নেমে আসে অত্যাচারের ষ্টীম রোলার। মাষ্টারদা পাল্টা আঘাত হানার সিদ্ধান্ত নেন। এসময় বিপ্লবীদের বিভিন্ন অপারেশনে ঢাকার আহসানুল্লা দারোগা, চাঁদপুরে ইনসপেক্টর তারিণী মুখোপাধ্যায়সহ আরো অনেকে নিহত হন। কুমিল্লার পুলিশ কর্মকর্তা এলিসনকে হত্যার দায়িত্ব অর্পিত হয় মাষ্টারদার বিশ্বস্ত শৈলেশ রায়ের উপর। তিনি চট্টগ্রাম থেকে রিভলবার ও কার্টিজ সংগ্রহ করলেন। কুমিল্লায় এসে ৭দিন এলিসনকে রেকী করলেন।
কিভাবে তিনি পুলিশ সুপারকে হত্যা করেন তার বর্ণণা শৈলেশ রায় লিখে গেছেন তার আত্মজীবনীতে।
আত্মজীবনীতে শৈলেশ রায় লিখেছেন- “কার্তুজ আনার পর বাড়ী হয়ে কুমিল্লা গেলাম। কুমিল্লা গিয়ে আমার কাজ (এলিসন ওয়াচ করা) আরম্ভ করলাম। তারপর ভাবলাম, রিভলবার নিয়ে এলিসন সাহেবের সামনে দিয়ে তো কোন দিন যাইনি, সেটা যাওয়া দরকার, কারন নার্ভ কি রকম থাকে সেটা পরীক্ষা করা দরকার। তার সামনে দিয়ে রিভলবার নিয়ে গেলাম। দেখলাম, নার্ভাস হইনি। ঠিকই আছি, আবার অনন্ত সিংহ এটাও বলেছিলেন, কোন অপঃরড়হ এ যাওয়ার আগে কার্তুজ ঠিক আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে নেবে সেই অনুযায়ী হরলালদাকে (যিনি আমাকে দলে যুক্ত করেছেন) নিয়ে রেললাইনের পাড়ে রিভলবার টেস্ট করলাম। তারপর ২৯ শে জুলাই ১৯৩২ সালে খেয়ে দেয়ে বের হচ্ছি, তখন আমার ছোট ভাই সীতেশ রায়কে বললাম- আমি যাই দাদা। আমি বললাম ছোটভাই মায়ের, বড় ভাই বাবার, আমি মেজভাই দেশের, সুতরাং আমাকেই দেশের কাজে যেতে হবে। মাকে বলিস (মা তখন বার্মা দেশে) আমি দেশ মাতৃকার চরণে নিজেকে বলি দিতে যাচ্ছি।
ষ্টেডিয়ামের উত্তর দিকে রাস্তা দিয়ে এলিসন সাইকেলে আসছিলেন (তখনও ষ্টেডিয়াম তৈরী হয়নি)। বর্ষাকাল তাই ছাতার প্রয়োজন ছিল, হঠাৎ সেই ছাতার ভিতর থেকে রিভলবার বের করে সাইকেল আরোহী এলিসনকে গুলি করলাম। উনি তিনটি গুলি খেয়ে ড্রেনেই পড়ে গেলেন আরও দুটি গুলি ড্রেনেই তাঁকে লক্ষ্য করে ছুড়লাম। পাঁচটা গুলিই শেষ হয়ে গেল, একটা গুলিও আর রইল না। তখন রিভলবার খালি। আমার আর কার্তুজ ভরারও সময় নেই। আত্মহত্যা করাটা আমি ভীরুতা মনে করি। তাই দৌড়তে আরম্ভ করলাম। এলিসনের দেহরক্ষী ও আমার পেছনে ধর ধর বলে কিছুদুর ধাওয়া করলো। আর গেল না এলিসনের দেহরক্ষী গুলি ছুড়তে পারে এই আশংকায় আঁকাবাঁকা পথে দৌড়ালাম, দৌড়াচ্ছি দৌড়াচ্ছি এমন সময় একটা ধোপা আমাকে ধরতে পারত তাঁকে ফাঁকা রিভলবার দেখাতেই সে সরে গেল। তারপর ছোট্ট একটা মাঠ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি। এমন সময় রাস্তার নিকট কতগুলি লোক জড়ো হচ্ছিল। তারাও ইচ্ছা করলে ধরতে পারতেন, কিন্তু তারা দূর থেকেই জিজ্ঞাসা করলেন কী? আমি বাঁ হাত তুলে দুরে দেখিয়ে বললাম আগুন আগুন। ডান হাতে ফাঁকা রিভলবার লুকানো ছিল। তারা পথ ছেড়ে দিল। তারপর আমার খুব কাছে একটা গলির মধ্যে গিয়ে রিভলবার রিলোড করলাম তারপর বহুরাস্তা ঘুরে বাসায় গিয়ে উঠলাম। বাসায় পৌছে দেখি হাতে গুলির চিহ্ন, রক্ত ঝরছে। একশন এর সময় বুঝতে পারিনি, এলিসন বা তার দেহরক্ষীর গুলি আমার হাতে লেগেছে হয়তো। বাসায় পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ছিল। ক্ষতস্থানে লাগালাম। তারপর পরনের জামা কাপড়গুলো ইটের সাথে বেঁধে পুকুরে ফেলে দিলাম, কিছুক্ষণ পরে ¯œান করে বৈঠকখানায় গিয়ে শুনলাম এলিসনকে গুলি করা হয়েছে, ও খুব অত্যাচারী ছিল, বেশ হয়েছে।
যে স্থানে এলিসনকে গুলি করেছিলাম ঠিক তার দক্ষিণ মাঠে একটি ভালো ফুটবল খেলা চলছিল- ¯œান সেরে সেই মাঠে খেলা দেখতে গেলাম। এরপর এক সপ্তাহ বাসাতেই ছিলাম এবং তারপর সেখান থেকে দুর্গাপুর হয়ে মাষ্টারদার সাথে দেখা করতে গেলাম। যাওয়ার পথে এক জায়গায় নৌকায় ওঠার সময় আমার সঙ্গী বলল যে, -আপনি তো চিটাগাঙের ভাষা বলতে পারেন না, আপনি তাই বোবা হয়ে থাকবেন, আমি আপনার কথা লুফে নিয়ে উত্তর দেব। তারপর মাষ্টারদার সঙ্গে দেখা করলাম। মাষ্টারদা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করে অভিনন্দন জানালেন।”
- ‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’
- চাঁদপুরে বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মীর জামিন
- হামাসের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা
- চাকরিচ্যুত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান
- পাসপোর্ট হাতে পেলেন খালেদা জিয়া
- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় পদে রদবদল
- পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম
- ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত
- রাষ্ট্রপতির কাছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক তালিকা: সমন্বয়
- সাঈদ খোকনের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট
- শেখ হাসিনাকে নিয়ে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের সামনে ভারত
- পরিবারসহ সাংবাদিক শ্যামল দত্তকে ফেরত পাঠালো আখাউড়া ইমিগ্রেশন
- শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের
- তারেক রহমানের বন্ধু মামুনের জামিন, কারামুক্ত হচ্ছেন আজই
- পালাব কীভাবে, আজও ডিএমপি গিয়েছি : হারুন
- ভাঙচুর-লুটপাটের বিরুদ্ধে বরিশালে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর অবস্থান
- এমপি শিমুলের পোড়া বাড়ি থেকে চার মরদেহ উদ্ধার
- ১১ আগস্টের এইচএসসি পরীক্ষা হচ্ছে না
- সচিবালয় থেকে সরানো হয়েছে মন্ত্রীদের নামফলক
- আন্দালিব রহমান পার্থ, নুর ও আসিফ মাহতাবের জামিন
- জুনাইদ আহমেদ পলক আটক
- মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া
- জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত
- কুমিল্লায় বিজয় মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাবেক আইনমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, মেয়রের বাড়িতে আগুন
- আমুর বাসা থেকে ৫ কোটি টাকা উদ্ধার
- ইসলামী ব্যাংকে ঢুকতে পারছেন না এস আলমের নিয়োগকৃতরা
- হাসিনা এখনো দিল্লিতে, ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে সময় দিচ্ছে ভারত
- ইসলামপন্থিদের খুশি করতে হাসিনা আমাকে দেশছাড়া করেছিল : তসলিমা
- বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন ঘেরাও-অগ্নিসংযোগ
- বিয়ের দিন বাড়িতে হাজির প্রথম স্ত্রী
- রোহিঙ্গা সমস্যায় পাশে থাকবে চীন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- মাঠে ছিলেন না কুমিল্লার সংসদ সদস্যরা, অনেকেই বিদেশ ভ্রমণে
- সুপ্রিম কোর্টের আদেশে সরকারের কোটা সংক্রান্ত পরিপত্র বলবৎ হয়েছে
- কারফিউ শিথিলে স্বস্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ
- কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থী মৃত্যুর গুজব
- কোটা ইস্যুতে আমি কোনো ঘাটতি রাখিনি: প্রধানমন্ত্রী
- শিক্ষকদের উদাসিনতায় প্রাথমিকে কমছে শিক্ষার্থী
- হাজীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ৪ মামলায় আটক ২৫
- ফার্মগেটে মেট্রোরেল স্টেশনের ভেতরে হামলা
- নেত্রকোণায় চুরি হওয়া মোটরসাইকেল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উদ্ধার
- বুধবার থেকে স্বাভাবিক সময়সূচিতে অফিস
- মতিঝিলে ২০০ কোটি টাকার দেবোত্তর জমি উদ্ধার
- চাঁদপুরে অপহরণের ৬ মাস পর শিশু উদ্ধার
- চাঁদপুর শহরে একাধিক কুকুরের কামড়ে অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু
- আমার নয়, আটক ওই শিক্ষার্থীর খোঁজ নিন: ঢাবি শিক্ষিকা
- হতদরিদ্রের বাড়িতে সহায়তা পৌঁছে দিলেন ইউএনও শাহীনুর
- বাংলা ব্লকেড বা শাটডাউন
- কুমিল্লায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত